রাজ্জাক-ডিপজলের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে!

নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেতা ডিপজলের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। কেউ কাউকেই বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন। যে কোন সময় বেধে যেতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সর্বত্র টানটান উত্তেজনা। ভয়ের কিছু নেই। এটা বাস্তবে নয়, পর্দায়। আলোচিত পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ঈদের ছবি রিকশাওয়ালার ছেলে�তে প্রচণ্ড বিত্তশালী আলমাস চৌধুরী রাজ্জাকের সঙ্গে 'রিকশাওয়ালার ছেলে' রুস্তম ডিপজলের দ্বন্দ্ব তৈরি হবে আলমাস চৌধুরীর কন্যা সেতু রুপি রেসীকে নিয়ে।

আলমাস চৌধুরী রাজ্জাকের চার মেয়ে। রেসী, মুক্তি, রুমানা ও শাকিবা। ছোট ভাই মিজু আহমেদ বড় ভাইয়ের সকল ব্যবসার দেখা শোনা করতে করতে এক সময় সবকিছু নিজের নামে করিয়ে নেন। তার আগে কাশেম ঢালী নামে আরেক বিত্তশালী মিশা সওদাগরের সঙ্গে রাজ্জাকের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ তৈরি হয়। দু'জন দু'জনের শত্রু বনে যায়। একদিন রাজ্জাকের কন্যা রেসীকে আক্রমণ করে মিশার তিন ভাই। রেসী দৌড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় রমজানের রিকশার গ্যারেজে। রমজান প্রবীর মিত্র একজন 'রিকশাওয়ালা' তার ছেলে রিকশা গ্যারেজের মিস্ত্রি ডিপজল। ডিপজল মাস্তানদের হাত থেকে রেসীকে উদ্ধার করে। ডিপজলের সহকারী টুনি দীঘি আর রিকশাওয়ালা কাবিলা যিনি গায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তারা ডিপজলকে অনুরোধ করেন রেসীকে রিকশায় বসিয়ে বাসায় পৌঁছে দিতে। ডিপজল রাজি হয় না। বলে আমি রিকশা গ্যারেজের মিস্ত্রি, রিকশা চালাই না। কিন্তু বাবা প্রবীর মিত্রের নির্দেশে ডিপজল রিকশা চালিয়ে রেসীকে রাজ্জাকের বাড়ি পৌঁছে দেন। খুশি হয়ে রাজ্জাক তাকে দুই লাখ টাকা দিতে চাইলে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। রাজ্জাক যখন জানতে চান বলো কি চাও তুমি? উত্তরে ডিপজল বলেন, বলা সহজ, দেয়া কঠিন। রাজ্জাক আবার জানতে চান বলো কি চাও? ডিপজলের উত্তর, আমিতো আপনার মেয়েকেও চাইতে পারি। এই কথায় শুরু হয় দ্বন্দ্ব।

একজন সামান্য রিকশাওয়ালা রুস্তম আলমাস চৌধুরীর কন্যার দিকে হাত বাড়াতে চায় দেখে ক্ষুব্ধ হন আলমাস চৌধুরী। শুরু হয় দ্বন্দ্ব। কিন্তু রেসী ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েন রিকশাওয়ালার ছেলে ডিপজলের প্রতি। ডিপজল এটা মেনে নিতে চায় না। কিন্তু রেসী নাছোড় বান্দা। এতে তার ছোট তিন বোনও বিরক্ত। তারা অনেক বড়লোক বিয়ে করবে বলে বোনকে জানায়। কিন্তু তিনজন ভালবাসে বেকার যুবক সম্রাট, স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী জায়েদ খান ও খেলনা গাড়ি দোকানের সেলসম্যান আমানকে। তিনজন মিথ্যা পরিচয় দিয়ে রাজ্জাকের তিন মেয়েকে ফাঁদে ফেলে। এদিকে ডিপজল রেসীর সম্পর্ক গভীর হতে দেখে রাজ্জাক ডিপজলকে মেরে ফেলার নির্দেশ দিলে মিজু আহমেদের ভাড়া করা বাহিনী ডিপজলকে মেরে আহত করে। এতে পিতা প্রবীর মিত্র তার রিকশাওয়ালা বাহিনী নিয়ে রাজ্জাকের বাসায় গিয়ে প্রতিবাদ করে। এই সুযোগ নেয় মিশা সওদাগর। ভ্যান চাপা দিয়ে প্রবীর মিত্রকে গুরুতর আহত করে।

মৃত্যুর সময় প্রবীর মিত্র ডিপজলকে কসম দিয়ে যান যে, দাম্ভিক আলমাস চৌধুরীর কন্যা রেসীকে 'রিকশাওয়ালার ছেলের বউ' করতে হবে। ডিপজল কসম খায়। শুরু হয় দ্বন্দ্ব। প্রচণ্ড বিরোধ। রাজ্জাক কন্যা হিসেবে রেসীকে অস্বীকার করে। এক সময় ডিপজল তার সহযোগী বড়লোকের সন্তান আলেকজান্ডার বো'র সহযোগিতায় রাজ্জাকের তিন কন্যার প্রেমিকদের আসল পরিচয় তুলে ধরলে রাজ্জাক সেই তিন কন্যাকেও বাড়ি থেকে বের করে দেন। এমন সময় আসল রূপ বের হয়ে আসে মিজু আহমেদের। সে মিশা সওদাগরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজ্জাকের সকল সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়ে রাজ্জাককে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সব হারিয়ে রাজ্জাক নিজেও হয়ে যান 'রিকশাওয়ালা'। তার পর কি হয়-ছবি কোথায় গিয়ে শেষ এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইলেন না ডিপজল।

বললেন, দ্বন্দ্বের শেষটা সবাই হলেই গিয়ে দেখবেন। শুক্রবার রাতে একেবারে ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে 'রিকশাওয়ালার ছেলে' ছবি দেখলেন ছবির অভিনেতা প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজল। যারা দেখলেন তারা সবাই ছবির প্রশংসা করলেন। এক বাক্যে বললেন, ছবিটি সবশ্রেণীর দর্শকই দেখবেন। গল্প, শিল্পী, অ্যারেঞ্জমেন্ট সব মিলিয়েই পরিপূর্ণ ঈদের ছবি 'রিকশাওয়ালার ছেলে'। রাজ্জাক ও ডিপজলের রিকশা চালানোটা দর্শকদের জন্য বিরাট পাওয়া হয়ে দেখা দেবে। তারকা সমৃদ্ধ এই ছবির অন্য শিল্পীরা হলেন- রেসী, রুমানা, সম্রাট, আলেকজান্ডার বো, মুক্তি, শাকিবা, জায়েদ খান, আমান, জায়েদ খান, টেলিসামাদ, নাসরিন, শানুশিবা, ডিজে সোহেল, সালাদিন, জিল্লুর রহমান, কাবিলা, মিশা সওদাগর, মিজু আহমেদ, প্রবীর মিত্র ও দীঘি।