নগ্নতার আগ্রাসন ব্যাপকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। নাটকের সংলাপে অশ্লীলতার ছড়াছড়ির পর এবার তথাকথিত তারকা শিল্পীদের ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারিতা দেশীয় মিডিয়ার মাথা লজ্জায় নত করে দিচ্ছে। কতিপয় অভিনেত্রীকে তারকা হওয়ার সুবাদে স্বেচ্ছাচারিতার চরম পর্যায়ে চলে যেতে দেখা যাচ্ছে। প্রেমিক কিংবা স্বামীর সঙ্গে বৈধ-অবৈধ সম্পর্কের দৃশ্য স্বেচ্ছায় মোবাইল কিংবা ক্যামেরায় ধারণ করে কখনও নিজেরা কখনও আবার ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অভিনেত্রীর ব্যর্থ প্রেমিক সেগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে সেই অভিনেত্রীর যত না ক্ষতি হচ্ছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে মিডিয়ার। প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য এক সময় মিডিয়ায় মেয়েরা ফাঁদে পা দিয়েছেন এটা সত্য। আজকের অনেক বড় বড় অভিনেত্রী স্বেচ্ছায় হোক কিংবা বাধ্য হয়ে হোক এমনটি করেছেন। তবে ওই সময় ইন্টারনেট ছিল না। মোবাইল ছিল না। ওই সব দৃশ্য যারা ধারণ করতেন তাদের কাছেই থাকতো। দু’একটি অশ্লীল ম্যাগাজিন ছাপতো হয়তো।
কিন্তু এখনকার অবস্থা অন্যরকম। এখন যা কিছুই ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, মানুষের মোবাইলে মোবাইলে ঘুরে-যা দেখে সবাই ছিছি ছিছি করে। আর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় সমগ্র মিডিয়ার। সম্প্রতি দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রীর এহেন কর্মকাণ্ডে সমগ্র মিডিয়া বিব্রত। লজ্জায় মুখ তুলতে পারছেন না কেউ। কাউকে দোষও দিতে পারছেন না। কারণ ওইসব ভিডিওচিত্রে দেখা যাচ্ছে টিভির জনপ্রিয় নায়িকারা স্বেচ্ছায় এবং আনন্দচিত্তে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করেছেন। হয়তো তাদের স্বামী কিংবা প্রেমিকের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছিল। নয়তো অন্য রকম প্রেম করার সাধ জেগেছিল যা দেখে সবাই মুগ্ধ হবেন। তা না হলে স্বজ্ঞানে এসব কেউ করতে পারে সেটা ভাবতেই বিস্মিত হতে হয়। এখন এসব নিয়ে শুধু দেশীয় মিডিয়ায় নয়, বহির্বিশ্বেও চলছে ব্যাপক আলোচনা। মিডিয়ার কর্তাব্যক্তিদের মাথার ঘাম পায়ে পড়ছে। এর একটা শক্ত প্রতিকারের চিন্তা সবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
কেউ কেউ এসব নির্লজ্জ অভিনেত্রী মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের সঙ্গীদের আইনের আওতায় আনার চিন্তা-ভাবনা করছেন। যারা এসব নগ্ন দৃশ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়ানোর দায়িত্ব পালন করছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা জরুরি বলে মনে করছেন। সেই সঙ্গে শিল্পীদের সব বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টেলিভিশন বোদ্ধা বলেছেন, টিভি মিডিয়ার কর্তা ব্যক্তিদের সম্মিলিতভাবে এর প্রতিকারে মাঠে নামা উচিত। একজন সাধারণ মেয়ে কিংবা ছেলে যখন শিল্পী হয়ে যাবে তখন সে শিল্পী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একজন প্রতিনিধি। শিল্পের প্রতি তার দায়বদ্ধতা থাকা উচিত। ব্যক্তি জীবনে সে যেই হোক না কেন যতদিন তার শিল্পী পরিচয় থাকবে ততদিন তাকে নিয়ম কানুন মেনে সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে। ব্যক্তি জীবনকে ব্যক্তিগত পর্যায়েই রাখতে হবে। অন্যথায় তাকে মিডিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। ওইসব শিল্পীর অপকর্মের দায়ভার শিল্পী সমাজ এবং মিডিয়া নেবে না।